‘বন্ধ্যাত্ব’ চিকিৎসায় দুয়ার খুলেছে চমেক, মিলছে সাড়া

টুয়েন্টিফোর টিভি
প্রকাশিত : বৃহস্পতিবার, ২০২১ সেপ্টেম্বর ২৩, ০৪:২৩ অপরাহ্ন

পৃথিবীতে মা হতে চান না এমন নারী খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। মাতৃত্ব একজন নারীর জন্য অহংকার। কিন্তু প্রাকৃতিক কোনো কারণে যদি নারী মাতৃত্বের স্বাদ না পান তখন তার জীবনে নেমে আসে বিভিন্ন অপবাদ।  

এই একটি কারণই হয়ে দাঁড়ায়, ‘জন্মই যেন আজন্ম পাপ’। বন্ধ্যাত্ব বা ইনফার্টিলিটি শুধু নারীর সমস্যা নয়, পুরুষও ভুগতে পারেন এই জটিলতায়। এর চিকিৎসা ব্যয়বহুল হওয়ায় চট্টগ্রামের মতো বিভাগীয় শহরে ছিল না কোনও সুব্যবস্থা। স্বাধীনতার পর চট্টগ্রামে এই প্রথম প্রাতিষ্ঠানিকভাবে বন্ধ্যাত্বের চিকিৎসায় ইনফার্টিলিটি ইউনিট চালু হয়েছে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে। এতে মানুষের মধ্যে তৈরি হয়েছে আস্থা।  

চমেক হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ইনফার্টিলিটি ইউনিট চালু হওয়ার পর থেকে গত ৮ মাসে চিকিৎসা নিয়েছেন ৭০৭ জন। এর মধ্যে নতুন রোগী ২৮৯ জন, পুরনো রোগী ১৯৮ জন এবং ট্রান্সভ্যাজাইনাল সনোগ্রাফি (টিভিএস) করেছেন ২২০ জন।  

চিকিৎসকরা বলছেন, পর্যাপ্ত চিকিৎসা ও কাউন্সিলিংয়ের মাধ্যমে প্রায় ৮০ শতাংশ দম্পতির এই জটিলতা থেকে পরিত্রাণ সম্ভব। এর জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ ও সচেতনতা মেনে চলা জরুরি।  

বন্ধ্যাত্ব চিকিৎসার প্রতিষ্ঠানিক অবকাঠামো না থাকায় চট্টগ্রামে এই বিষয়ে ছিল না কোনও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক। ফলে স্ত্রী ও প্রসূতিরোগ বিশেষজ্ঞদের মাধ্যমে চলতো চিকিৎসা।

হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা একাধিক রোগী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, চট্টগ্রামে বন্ধ্যাত্ব নিয়ে চিকিৎসা নেই বললেই চলে। বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালে ঘুরেও এর কোনও সঠিক সমাধান পাইনি। শেষ পর্যন্ত এক চিকিৎসকের পরামর্শে চমেক হাসপাতালে এসেছি। চিকিৎসকদের আন্তরিকতা দেখেছি। তারা বেশ সাহায্য সহযোগীতা করছেন।  

চমেক হাসপাতালে ইনফার্টিলিটি বিভাগের প্রধান ও রিপ্রোডাক্টিভ অ্যান্ডোক্রাইনোলজি অ্যান্ড ইনফার্টিলিটি বিষয়ে এফসিপিএস ডিগ্রিধারী ডা. তাসলিমা বেগম বলেন, বন্ধ্যাত্বের চিকিৎসা একসময় রাজধানী ঢাকা ছাড়া অন্য কোথাও হতো না। তাই অনেকে বাধ্য হয়ে দেশের বাইরে চলে যেতো। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানিকভাবে চমেক হাসপাতালে এর চিকিৎসা শুরু হয়েছে। সদ্য প্রতিষ্ঠিত এই ইউনিটে অনেক সীমাবদ্ধতা আছে। এর মধ্যেও আমরা চিকিৎসা সেবা প্রদান করছি। কোনও কিছু শুরু না হলে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব না। এক্ষেত্রে অবশ্যই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এবং নীতি-নির্ধারকরা ধন্যবাদ পাওয়ার যোগ্য।
 
ইউনিট চালু হওয়ার পর কেমন সাড়া পাওয়া যাচ্ছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, অতি অল্প সময়ের মধ্যে রোগীদের আস্থা অর্জন করতে পেরেছি। রোগীদের সঙ্গে আন্তরিকভাবে কাজ করছেন এই ইউনিটের প্রত্যেক চিকিৎসক ও নার্স। এই চিকিৎসা অনেকটা ব্যয়বহুল হলেও সরকারি হাসপাতালের সুযোগ-সুবিধা কাজে লাগিয়ে খুব কম খরচে চিকিৎসা পাচ্ছেন রোগীরা।  
 
সামাজিকভাবে বন্ধ্যাত্বকে অভিশাপ মনে করা হলেও চিকিৎসার মাধ্যমে সমাধান সম্ভব বলে জানান এই চিকিৎসক। তিনি বলেন, মাতৃত্ব সৃষ্টিকর্তার এক অবিশ্বাস্য নেয়ামত। আমরা শুধু চেষ্টা করি মাত্র। যেহেতু সায়েন্টিফিক্যালি কিছু জিনিস ব্যাখ্যা করা যায় তাই চিকিৎসার ক্ষেত্রে দম্পতিকে একসঙ্গে আসার পরামর্শ দিয়ে থাকি আমরা।  

চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল এস এম হুমায়ুন কবীর বলেন, গত ফেব্রুয়ারি মাসে চমেক হাসপাতালে বন্ধ্যাত্ব চিকিৎসায়  ইনফার্টিলিটি ইউনিট চালু করা হয়েছে। কোনও ইউনিট প্রথমে চালু হলে কিছু সীমাবদ্ধতা থাকে, এখানেও রয়েছে। সকলের সদিচ্ছার ফলে এই ইউনিটটি চালু হয়েছে। এখানে অন্তত সাধারণ, গরীব রোগীরা কমমূল্যে চিকিৎসা নিতে পারবেন। সূত্র: বাংলানিউজ


প্রধান সম্পাদক : Arka Hossain

সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয় :

Epic Ettehad Point [Level-4] 618 Nur Ahmed Road Chattogram-4000.

 Newsroom : +88 01703 930636
 E-mail : faguntelevision@gmail.com

Copyright © 2021 www.fagun.tv । ফাগুন টিভি
Design & Developed by Smart Framework